আমতলীতে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ
মাইনুল ইসলাম রাজু
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আমতলী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতিসহ ৫জনের বিরুদ্ধে একটি ঘরপোড়া মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। হুমায়ন কবির হিরু নামে একজন বাদী হয়ে গত ৭ অক্টোবর আমতলী উজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে এ মামলা করেন। এঘটনায় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার বিবরন সূত্রে জানা যায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমতলী উপজেলার দক্ষিণ আমতলী গ্রামের মোসলেম আলী হাওলাদারের ছেলে মো. হুমায়ুন কবির হিরু হাওলাদার তার মাছের ঘেরের পাশে উঠানো বৈঠকখানা রাতের আঁধারে সাংবাদিক জসিম হাওলাদারসহ ৫ আসামিরা আগুন দিয়ে পুরে ফেলে এতে বাদীর সাড়ে চার লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে মর্মে অভিযোগ দাখিল করেন।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ পশ্চিম আমতলীর ওয়াপদা রাস্তার ও পারিবারিক কবরস্থানের পাশে একটি রেডক্রিসেন্টের ক্লাব ঘর ছিল। ওই ঘর রাতের আধারে আগুন লেগে পুড়ে যায়।
খবর পেয়ে রাতেই ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এবং তারা অগ্নিকান্ডে ১লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের অফিশিয়াল রিপোর্টে উল্লেখ করেন। রেডক্রিসেন্ট এর ক্লাব অজ্ঞাত কারণে পুড় যাওয়ার ঘটনায় ৩০ সেপ্টেম্বর মো. হুমায়ন কবির হিরু বাদী হয়ে আমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।
এই ঘটনাকে পুঁজি করে বাদী নতুন করে মো. হুমায়ন কবির হিরুসহ তাদেও সাঙ্গ পাঙ্গরা ঘেরের মধ্যের ঘর পুরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে পূর্বশক্রতার জের ধরে ৭ অক্টোবর আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ঘর পোড়া মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয়েছে আমতলী প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন হাওলাদারসহ বাদীর দুই সৎভাই সহ পাঁচ জনকে। প্রকৃত পক্ষে মাছের ঘের ও পুড়ে যাওয়া রেডক্রিসেন্টের ক্লাবঘর এর দুরত্ব আধা কিলোমিটার।
এলাকাবাসী ও রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা জানান, ক্লাবের অনেক আসবাবপত্র ছিল সে গুলো আত্মসাত করার উদ্দ্যেশে খালি ঘরে হুমায়ুন কবীর হিরু নিজেইন আগুন দিয়ে এখন সাংবাদিক জসিম উদ্দিন হাওলাদারসহ তার সৎভাইদেও ফাসাতে চাইছেন।
আমতলী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাংবাদিক মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, বাদী আমাদের হয়রানি করার জন্য একটি ঘরপোড়া মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে। যেখানে রেড ক্রিসেন্টের ঘর পোড়ার পর ফায়ার সার্ভিস ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন দিয়েছে ১লক্ষ টাকা। মামলার বাদী হুমায়ন কবির হিরু তার মামলায় ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছেন। এতেই বোঝা যায় এটি সাজানো এবং হয়রানি করার জন্য আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এর অগেও বাদী হুমায়ুন কবীর হিরু ফেনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে জেল খাটিয়ে়ছে। এছাড়াও মামলার স্বাক্ষীরা প্রায় সবাই ফ্যাশিষ্ট আওয়ামীলীগের দোসর। এদরে মধ্যে ২নং স্বাক্ষী বশির রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।
মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদার আরো জানান, হুমায়ূন কবির হিরু সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই, পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কারণে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। আমি পরিবার নিয়ে আমতলীতে বসবাস করি। গত এক বছর আমি বাড়ি যাইনি। তারপরও আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যই এই মিথ্যা মামলা দিয়ে়ছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
মামলা ৩ নং আসামী বাদীর সৎ ভাই নাসির উদ্দিন জানান, আমি আমতলী এমইউ মফিজ উদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, পৈত্রিক জমি থেকে বঞ্চিত করার জন্য বিভিন্ন সময় আমার সৎ ভাই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে় হয়রানি করে আসছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মামলার বাদী মোঃ হুমায়ুন কবির হিরুর (০১৭১২৫৪০৪৯০) নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, হুমায়ুন কবীর হিরু বসত ঘরের দক্ষিণ পাশের বৈঠকখানা অজ্ঞাত কারণে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর একটি সাধারণ করেছিলেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
এই সাইটের সব ধরণের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট কপিরাইট আইন দ্বারা সুরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই কন্টেন্ট ব্যবহারের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং আইনত শাস্তিযোগ্য। আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের একটি সুরক্ষিত ও তথ্যবহুল অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমাদের নিউজ সাইটের মাধ্যমে পাওয়া যেকোনো তথ্য ব্যবহারের আগে দয়া করে সেই তথ্যের উৎস যাচাই করতে ভুলবেন না। আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। আমাদের সাথেই থাকুন, সর্বশেষ খবর এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে।

